Header Ads

শীতে শুষ্ক ত্বক ও রুক্ষ চুলের যত্ন

শীতে শুষ্ক ত্বক ও রুক্ষ চুলের যত্ন




প্রকৃতির কেমন নিয়ম দেখুন দেখতে দেখতে দরজায় চলে এসেছে শীত।তাই শীতে শুষ্ক ত্বক ও রুক্ষ চুলের যত্ন নেওয়া খুবি জরুরী।  আর শীত কাল মানেই প্রকৃতির সাথে একরাশ শুষ্কতা যোগ হওয়া। প্রকৃতির এই শুষ্কতার পাশাপাশি আমাদের জন্য নিয়ে আসে ত্বকের শুষ্কতা ও অনুজ্জ্বলতা।  আর এই শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল চেহারার জন্য আমরা সর্বদায় চিন্তিত থাকি। কিভাবে ত্বককে মসৃন ও উজ্জ্বল করা যায়। এসময়ে দরকার বাড়তি কিছু যত্ন। শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরন করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়। আসুন জেনে নেই কিভাবে শীতের রাতে ত্বকের যত্ন করতে হবে।

শীতে ত্বকের যত্নের কিছু টিপস

  • শীতকালে ক্রিম, সাবান যাই ব্যবহার করবেন লক্ষ রাখবেন তা যেন ময়েশ্চারাইজারযুক্ত হয়। দিনে অন্তত দু’বার ক্রিম ব্যবহার করবেন। আর বিশেষ করে শীতে ভিটামিন-ই যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা ভালো।
  • আমরা মনে করি, শীতকালে সানস্ক্রিন দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। এটি ভুল ধারণা। একথা ঠিক যে, সূর্যরশ্মি সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য উপকারি। এতে যে ভিটামিন পাওয়া যায় তা ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু বেশি সূর্যরশ্মি ত্বকে অপূরণীয় ক্ষতি ও অকালবার্ধক্যের কারণ হতে পারে। সানস্ক্রিন সূর্যরশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাই শীতকালেও নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।
  • শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় ত্বকের আর্দ্র ভাব কমে যায়। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ময়শ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তা ছাড়া গোলাপজল ও গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এছাড়া অলিভ ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন । অলিভ ওয়েল বা ময়েশ্চারাইজার পুরো মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে পড়বেন। এতে ত্বক পরিষ্কার হবে এবং সকালে দেখবেন ত্বক হয়ে উঠবে প্রানবন্ত।
  • শীতের আরেক সমস্যা হচ্ছে ঠোঁট ফাটা ও ঠোট কালো হয়ে যাওয়া। এর সমাধানও গ্লিসারিন। বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্লিসারিন অথবা লিপ জেল লাগাবেন। ঠোঁটে বা হাত পায়ের চামড়া ফেটে গেলে ভিটামিন-ই যুক্ত ভেসলিন লাগাবেন।

শীতের রাতে ত্বকের যত্ন নিবেন যেভাবে

ত্বক পরিষ্কারের নিয়ম

যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা অনেকে ভাবেন শীত কাল এসছে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে না। আবার ঠান্ডা পানির ভয়ে অনেকে ত্বক পরিষ্কার না করে থাকে। কিন্তু এর ফলে ত্বকে ব্রণ দেখা দিতে পারে। তাই শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। ত্বক পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে অলিভ অয়েল বা বেবি অয়েল দিয়ে মুখ ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। এরপর হালকা গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মুখটা মুছে ফেলতে হবে। সবশেষে ভালো কোনও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

 ময়শ্চারাইজ করা

শীতে যেহেতু ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায় তাই এসময়ে দরকার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করা। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ধোয়ার পরে অবশ্যই ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে নেওয়া জরুরী। ময়শ্চারাইজার হিসেবে ভালো কোন ময়শ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন অলিভ ওয়েল। ময়েশ্চারাইজার পুরো মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে পড়ুন। তাহলে সকালে উঠে পাবেন প্রানবন্ত ত্বক।

শীতে ত্বকের যত্নে ফেস প্যাক

শীতের ফেস প্যাক অন্য সময়ের থেকে হবে একটু আলাদা। কারণ এসময়ে দরকার ত্বকের বাড়তি যত্ন। শীতে ত্বকের যত্নের জন্য জেনে নিন দুটি ফেস প্যাক বানানোর প্রনালী।
  • ফেইস প্যাক তৈরিতে প্রথমে এক টুকরা পাউরুটি দুধে ভিজিয়ে নরম করে এর সাথে খানিকটা পাকা কলা চটকে মিশিয়ে    পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে ওই মিশ্রণটি মুখে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে শুষ্ক ত্বক মোলায়েম হয়ে উঠবে।
  •  শীতের ফেইস প্যাক তৈরি করতে পাকা কলা, পাকা পেপে ও ময়দা এক সাথে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর এই পেস্টটি ১০/১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃন।

শীতে চুলের যত্নে কিছু নতুন টিপস

শীতে চুলের যত্ন

  1. বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে শীতে চুল হয়ে উঠে রুক্ষ এবং খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় খুশকির সমাধানে ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
  2. চুল সাধারণত দু’রকম, তৈলাক্ত ও শুষ্ক। তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে চুল সবসময় পরিষ্কার রাখা জরুরি। একদিন অন্তর অন্তর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হবে। আর শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে হটওয়েল থেরাপি ভালো কাজ করে। সামান্য গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে। এরপর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
  3. রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পারলে নিয়ম করে বসে চুল আঁচড়াবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে ঘুমাতেও পারবেন।
  4. শীত কালে অনেকেরই চুল রুক্ষ হয়ে যায় এং আগা ফেটে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করেন নিন। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।
  5. ভিটামিন-ই চুলের জন্য অনেক ভালো। ২ দিন পর পর যেকোন তেলের সাথে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে এর তেলটি মিশিয়ে মাথায় ভালো ভাবে লাগিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখতে হবে। সারারাত রাখলে ভালো হয়। সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধুয়া উচিত না।
  6. শীতকালে ত্বকের ও চুলের যত্নে কিন্তু আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। হাতের নাগালের সব ফলই প্রতিদিন খাবেন। যেমন-আপেল, আমলকী কিংবা আমড়া ইত্যাদি ফলমূল।
  7. শীতে এইসহজ কিছু পদ্ধতিগুলো অনুসরন করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়।
  8. আরো একটা কাজ করতে পারেন, যদি অনেক বেশি খুশকি হয় তাহলে আমলকীর গুড়া বাজার থেকে কিনে হালকা গরম পানি নিয়ে ৩০ মিনিট আগে গুড়াটা ভিজিয়ে রেখে, ভাল ভাবে ভিজে গেলে মাথায় সব জায়গায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করলে চুল অনেক ঝলমল ও খুশকিমুক্ত হবে।

No comments

Theme images by bulentgultek. Powered by Blogger.